মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
মহান স্বাধীনতা দিবস আজ

মহান স্বাধীনতা দিবস আজ

নিউজ ডেস্ক।।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালির জীবনে নেমে আসে এক ভয়ংকর, নৃশংস ও বিভীষিকাময় অন্ধকার রাত। অন্য দিনের মতো সেটি স্বাভাবিক ছিল না। অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে ইতিহাসের বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ আর ধ্বংসের উন্মত্ত তাণ্ডব চালায়, সেদিন থেকে স্বাধীনতা কথা বাঙালির হয়ে যায়। অবশ্য ৭ মার্চের ভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, তখন আর বাঙালির বুঝতে বাকি ছিল না লড়াই করতেই হবে। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতেই হবে।

বঙ্গবন্ধুর ‘আমি যদি হুকুক দিবার নাও পারি’র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সেটা আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। কালরাত্রির বাঙালি নিধনযজ্ঞ চলাকালেই মধ্যরাতের পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। আর সেই থেকেই ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি আমাদের হয়ে গেল। আজ সেই মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।

‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েই শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার পথচলা। আজকের দিনটি তাই বাঙালি জাতির জন্য এক গৌরব ও অহংকারের। সবকিছু ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাওয়ার দিন। একই সঙ্গে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে যেসব বাঙালি তাদের প্রাণ আত্মাহুতি দিয়েছেন, যেসব মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার দিন।

একটি কথা স্মরণ রাখতে হবে, স্বাধীনতার সরাসরি ঘোষণা আসে ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর। ওই রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পিলখানা, রাজারবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে হামলার পর রাত পৌনে ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন।

পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনাই ছিল গণহত্যা শুরুর পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের। সে অনুযায়ী, ওই রাতে কর্নেল জহিরের নেতৃত্বে একটি কমান্ডো প্লাটুন বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ক্যাপ্টেন হুমায়ুনের নেতৃত্বে সেনারা ভবনের চারদিকে অবস্থান নেয়। মেজর বিলাল দোতলার বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে বঙ্গবন্ধুকে ধরে নিয়ে যায়। তারা বঙ্গবন্ধুকে ট্যাংক-কামানসহ কড়া পাহারায় শেরেবাংলা নগরের সামরিক সদর দফতরে নিয়ে যায়। পরে তাকে নেওয়া হয় ক্যান্টনমেন্টে সেনাবাহিনীর অফিসার্স মেসে। টিক্কা খানের নির্দেশে বঙ্গবন্ধুকে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকেই পরদিন নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানে।

বঙ্গবন্ধুর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণাটি চট্টগ্রামে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজের সেটেও ধরা পড়ে। শুনতে পান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার প্রধান মেজর সিদ্দিক সালিকও। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবরটি পাকিস্তান সরকার ও ইস্টার্ন জোনের সামরিক কর্মকর্তাদের জানান।

ওয়্যারলেস বার্তাটি চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জহুর আহম্মেদ চৌধুরী পেয়ে রাতেই তা সাইক্লোস্টাইল করে বিলির ব্যবস্থা করেন। পরদিন এ বার্তাটিই কালুরঘাট বেতার থেকে সর্বপ্রথম পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান। তারপর বারবার ঘোষণাটি পড়ে শোনান অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার এ ঘোষণাটি পাঠ করানোর জন্য মেজর জিয়াউর রহমানকে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন চট্টগ্রামের বেতারকর্মী বেলাল মোহাম্মদ, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ ও অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। মেজর জিয়া প্রথমে নিজেকে সুপ্রিম কমান্ডার ঘোষণা করেন ও পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন।
ঢাকাসহ সারা দেশেই শুরু হয়ে যায় প্রতিরোধ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। সমগ্র জাতি দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান বুকে ধারণ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিপাগল বাঙালির অকুতোভয় লড়াই আর রক্তের বন্যায় ভেসে যায় পাকিস্তানের দক্ষ, প্রশিক্ষিত ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত বাহিনীর সব কৌশল। ৯ মাসের সংগ্রামে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নেয় একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
আজ সব স্মৃতির মিনারে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ দেশের সব স্মৃতির মিনার। দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD